দেশে ভালো নেই অভিবাসী মায়েদের সন্তানেরা
সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য তাদের দেশে রেখে কাজ নিয়ে বিদেশে যান মায়েরা। অভিবাসী নারী কর্মীরা কষ্টের উপার্জনের বেশির ভাগটাই পরিবারের জন্য দেশে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু ভালো নেই অভিবাসী এই মায়েদের সন্তানেরা। অযত্নে বড় হচ্ছে তারা। স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। অসুখেও ভোগে। মায়েরা ভরসা করে যে অভিভাবকের কাছে সন্তানদের রেখে যান, তাঁদের কাছেই শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতিত হয় ৬০ শতাংশ শিশু। বেসরকারি একটি সংস্থার পরিচালিত গবেষণা জরিপে এসব তথ্য জানা গেছে।
Disclaimer: OKUP does not own this article. All rights belong to its rightful owner/owner’s. The views and opinions included in this video/article belong to their author and do not necessarily mirror the views and opinions of OKUP. Source: Prothom Alo
গ্রামে রেখে যাওয়া শিশুদের ওপর নারী অভিবাসনের প্রভাব যাচাই করতে গবেষণা জরিপটি পরিচালনা করেছে অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ)। ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চরহরিরামপুর, চরভদ্রাসন ও গাজীরটেক ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায় গবেষণা জরিপটি চালানো হয়। এসব প্রত্যন্ত এলাকায় অবকাঠামোগত ও সামাজিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
এমনই একজন ফরিদপুরের চরহরিরামপুর ইউনিয়নের যুঁথী। সে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। দুই বছর ধরে জর্ডান থাকেন তার মা। যুঁথী প্রথম আলোকে বলে, ‘সে গ্রামে বাবা ও দাদির সঙ্গে থাকে। বাসার সব কাজ করতে হয়। দাদি প্রায়ই বলেন, পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে।’
গবেষণা জরিপ প্রতিবেদন বলছে, দিনে গড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা বাসার কাজ করে শিশুরা। প্রতিদিন এসব কাজ করতে ভালো না লাগলেও নির্যাতনের ভয়ে তারা কাজ করতে বাধ্য হয়। এসব শিশুদের মধ্যে বাল্যবিবাহ খুব নিয়মিত বিষয়। অনেক মেয়েশিশুকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেন স্থানীয় অভিভাবকেরা। বিয়ের পর মেয়েশিশুদের দ্রুত অভিবাসী কর্মী হিসেবে কাজে পাঠানো হয়। যাতে তারা স্বামীর জন্য আয় করতে পারে।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ১৯৯১ সাল থেকে নারীরা কাজ নিয়ে বিদেশে যেতে শুরু করেন। ২০০৩ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে বিদেশে গেছেন ১ হাজার ৪৭৯ নারী। এরপর এটি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। কয়েক বছর ধরে লাখের বেশি নারী কর্মী যাচ্ছেন বিদেশে। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৯ লাখ নারী কাজ নিয়ে বিভিন্ন দেশে গেছেন। আর ৯০ শতাংশ নারী দেশে তাঁদের শিশুদের রেখে যান বলে ধারণা করছে ওকাপ।
৪০০ পরিবারে পরিচালিত জরিপটি ৩ মার্চ প্রকাশ করেছে ওকাপ। এর মধ্যে ২৫০ অভিবাসী নারী কর্মীর পরিবার। বাকি ১৫০ পরিবারে অভিবাসী নেই। জরিপে ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। যেসব নারী কর্মী অনেক দিন ধরে বিদেশে আছেন এবং নিয়মিত টাকা পাঠাচ্ছেন, শুধু তাঁদের পরিবারকে গবেষণা জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
Read the full news here on Prothom Alo